সৈয়দ সাখাওয়াৎ

আমাদের দিনগুলো হাতে নিয়ে আসেনি কখনোঅথচ ভীষণ একা, মানুষের শরীরের কাছে—কেবল অস্থি-চর্মের আড়ালে ছায়া হয়েছি শুধুকেবল তোমার চোখ, দূরতম দ্বীপ হয়ে আসেমুদ্রিত হরফে তার খবর পাই বিশীর্ণ দিনেযেন কেউ ছিল প্রশ্নে, আমার উত্তর না জেনেইতুমি চির তিমিরের মাঝে চোখ...

একদিন সবকিছু থামে, চোখ থেকে সরে যায়—অমীমাংসার ছায়া—পরিচিত ভঙ্গি ক্লিশে লাগেতখন স্বপ্নের চেয়ে অতিদ্রুত নেমে আসো তুমিএই যে চলে যাওয়া—হেমন্তের চিরচেনা সন্ধ্যাশরীরের গাঢ় ঘ্রাণ, সবকিছু পুরনো চিঠির—মতো দূরতম দ্বীপ হয়ে ওঠে। রাতের আকাশে—নিরীহ বাতাস থির হয়ে...

আমার স্মৃতির কাছে তারা যেন অম্লান গোধূলিযারা এসেছিলো কাছে—অবসন্ন জীবন পেরিয়েএই ফুরিয়ে যাওয়া জীবনে, প্রগাঢ় ভালোবেসেআমি তার ছায়া থেকে মুছে ফেলি অশ্রুবিন্দুগুলি। তবু কা’র অশ্রুবিন্দু ঝরে? একা ঘরের খোলসে?সে-ও পরবাসী হয়, স্পর্শরেখা ছেড়ে অবশেষে। আমার জীবন...

আমি যেন ভুল করে তোমার দুয়ারে গেছি একাঅথচ সেদিন তুমি বলেছিলে, এ’প্রশ্ন জরুরী নয়বরং এসো, এখন ভুলে যাই; পথ ধরে হাঁটিযেখানে চৌরাস্তা পাবে, চলে যেও—চোখে নিয়ে নদী।আমি তার দুই চোখে, হেঁটে হেঁটে ফিরে যাই ঘরেসে-ও ফিরেছে ঠিকই, অতিদ্রুত নির্ভার জীবনেযেখানে...

সৈয়দ সাখাওয়াৎ সবকিছু ফুরিয়েছে? বলা হয়ে গেছে সব কথা?অলকের বনে বনে নেমেছে এমন নীরবতা—যেন কোনদিন এই পথে থামেনি তোমার গানতাই পাতা উল্টে যাই—বুকে হাওয়ার অভিধান শব্দগুলো ঝরে যায়, আরো ঝরে বিষন্ন আলাপ —শিশিরের মতো চুপচাপবুকের ভেতর জল টেনে নেয় প্রবল...

সবকিছু ভেঙে পড়ে, আর কিছু রাত্রির প্রমাদআমাকে আলাদা করে যেভাবে সকাল থেকে রাত—আলাদা হয় নিয়ত গ্রহ ও নক্ষত্রের পর্যটনেচারিদিকে শুধু তার গ্রহণের চিহ্ন পড়ে আছেশুনেছি প্রবাসী নাম, তুমি কণ্ঠলগ্ন হয়ে আছোপ্রতি বিকেলের ছায়া সন্ধ্যার গানে মিলিয়ে যায়কত স্বর...

আমাকে গ্রহণ করো। থেমে গ্যাছে পূজার আরতিশিল্পের অনাথ আমি, কান পেতে রয়েছি কখনতুমি ডেকে ওঠো, এই কার্তিকে–ধূলো ওড়া শহরেনিশ্বাসে চিরকালের ক্ষুধা নিয়ে বসে আছি যেনজেনেছি, সর্বস্ব ছুঁয়ে–প্রতিমা বিসর্জনের আগেসকল শিল্পের রূপ আমাকে অন্ধ করে...