দিনগুলো চলে যাবে, থেকে যাবে নীরব অস্বস্তি
পুরনো চিঠির মতো, ধূলো জমবে সবকিছুতে
রবে অলক্ষ্যের গান- প্রণয় মেলার সদগতি
আর সাক্ষ্যহীন স্মৃতি, ভিজবে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে
তখন ফিরতি পথে কখনো ডেকে বলবে আর?
আমারও নাম ছিল, ছিল মুহুর্ত ছোঁয়ার সাধ
বিলীয়মান আলোতে যার ইচ্ছে হতো হারাবার
তারে দেখি দূরলগ্নে- ফুটে থাকা আলোকের রাত
জানি, এ বাক্য যাবে না কোনদিন সময়ের কাছে
শতাব্দীলগ্ন দালানে ছুটে ছুটে হবে শুধু ক্লান্ত
যেন সব আলাপন হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে
যেন খুব সঙ্গোপনে সে যেন সবকিছু জানতো!
২.
অথচ জানি, এরকম চুরি করা সন্ধ্যায়–
বুকের ভেতর নেচে ওঠে হাজারো প্রজাপতি
কেমন নিঃস্ব মনে হয়–যেনবা ফেরার দরোজায়–
স্থির হয়ে আছে আঁধার, যেন এক দীর্ঘ যতি
তবু ভালো লাগে, তবু মনে হয় একটা জীবন
গ্রহণের দ্বারে দ্বারে না হয় কাটিয়ে দিলাম
এতটুকু ঐশ্বর্য আমার–যতটুকু তোমার মন–
কাছে ডাকে–ততটুকুই ভাগ করে নিলাম….
৩.
আমার হলো না তোমার কাছে যাওয়া
আরও কত কিছু ভুলে যাওয়া মওসুমি
পথে পথে ঝরা বকুলের মায়া ঘ্রাণে
তোমাকে খুঁজছি, প্রিয় জীবনের বনভূমি
সূর্য ছুঁয়েছে হয়তো তোমার জানালায়
তুমি আলগোছে মুখ গুঁজে আছো বালিশে
চিরকালীন এই রূপকের প্রতি ছায়ায়
অলকের বনে ঘুম চোখ তুমি আবেশে
আমার হলো না মুখোমুখি কোনদিন
শেষ সময়ের আয়ু থাকে আর কতো
বুকে বয়ে যায় এক শতাব্দী মেঘ
আর ঝুরো ফুলে তোমারই স্মৃতি যতো।
৪.
কত জল বয়ে যায়, কত ভার সমস্ত শরীরে
মিশে পথের রেখায়, যেখানে নুয়ে পড়ে ঘাসেরা
মাটির গভীর থেকে যেন উঠে আসে শীতলতা
অস্থির অপেক্ষা বড়– তবু জেগে থাকে অন্ধকারে
সকল আঁধার থেকে আরও কোনো গাঢ় আঁধার
থেকে থেকে ফিরে আসে, আমাদের শীতল নিশ্বাসে
কী কথাইবা বলার ছিলো, বলেনি আজ অবধি
শুধু এইসব কথা, একদিন অর্থ খুঁজে পাবে–
এই দুইচোখে তাই ধরে রাখি সেই প্রতিচ্ছবি
বেঁচে থাকার বিপুল আয়োজনে ফেলে যাই সব
যেনবা অন্ধের চোখ, চির আঁধারের রূপ চিনে–
আর কোথাও ফেরার কথাটিও ভুলে যায় হায়
অন্তিম পাতার গান, ঝরে পড়ার যে সুরে বাজে
আমি যেন তার কাছে বসে থাকি বিলয়ের আগে।