সৈয়দ সাখাওয়াৎ
যতো দূর দ্যাখি, যেন আদরের নদী
ফিরে আসে চোখে মৃদু প্রণয়ের ঢেউ
আরও গাঢ় হয় পাথরের নীরবতা
গড়িয়ে নামে বুকে জল নিরবধি
ঝরা বকুলের গন্ধ মেখে মেখে
কত দূরে যায় চির বাসনার মেঘ
তোমাকেও ডাকে–যেখানে নীরব ভাষা
বলে যায় কথা তোমারই নামটি ডেকে
ডানার সীমানা আমাকে শেখাবে কেউ
জানি না সকাল রোদমাখা এইদিনে
কতটা প্লাবন বয়ে যায় বুকের গভীরে
জানে প্রিয় মেঘ দূরে উড়ে চলে গেলেও।
২.
সহসা এখানে দুখের হাওয়া বয়
চির পরিচিত ভাষারা হারিয়ে যায়
কত প্রণয়ের স্মৃতিরা করে ভীড়
আর সহগের বেদনাটুকু রয়
অথচ নদী আদরের ঠিকানায়
পৌঁছে যায় সকল দুয়ার ঠেলে
তুমি না হয় দূরের কোনো ঘরে
শুনে যাবে ঠিক যত সুর বেজে যায়
দীর্ঘ হবো যতিচিহ্ন মুছে মুছে
তোমাকে চাইবো প্রেম ও পূর্ণতায়
সব গল্প অভিলাষী মেঘে মেঘে
ভেসে যাবে ঠিক তোমাকে খুঁজে খুঁজে
তখন জেনো–বুকের অতল ছায়ায়
কত জীবনের শূন্যতা পুষে রাখি
আসে সেই দিন গ্রহণের ওপার থেকে
স্পর্শ পেলে কোমলে মিলিয়ে যায়
তাই পুষে রাখি জানি বিরহের দিন
কবির হৃদয়ে অবুঝ রক্তক্ষরণ
বিরহীর নাম ক্ষত-বিক্ষত হয়
লিখে রাখি তবু এক জীবনের ঋণ।
৩.
যদি সময়ের আড়াল থেকে তুমি
ডেকে ওঠো প্রেমে সব গানে সব সুরে
মাতাল প্রহরে জাগালে অনল ঢেউ–
ক্রমে জেগে ওঠে বেহাগের মনোভূমি
সারা শরীরে ঝরা পালকের গান
ঠোঁটজুড়ে আছে নীল বিরহের বিষ
পান করে যাই নিষিক্ত ফুলেদের
অথবা শিশিরে আগলভাঙা স্নান
৪.
কোন কোনদিন বৃষ্টিমগ্ন দিনে
ভুলে যাই সব, যেন আনন্দ গান
থেকে থেকে বাজে–কেননা তখন তুমি
হাত ধরে আছো, আমাকে বাঁধছো ঋণে
এই বাতাসে তোমারই গন্ধ ভাসে
অন্ধ হলাম ব্যাকুল আহ্বানে
ঝরা পালকের গান হই করুণা ধারায়
একটা জীবন, জীবনের কাছে আসে।
১ নভেম্বর ২০২৪