তুমি আড়ালেই থেকো, না দেখার অন্ধকারে ক্রমে–
আমার শরীরে জমে উঠবে নীরব এক নদী
আলোহীন হতে হতে চোখগুলো হয়ে যাবে স্থির
আর বুকের ভেতর হাওয়াদের আসা-যাওয়া
একদিন ঠিক বুঝে যাবো–সকল বাস্তুহীনতা
মূলত মোহের দিকে যায়, যেমন; তোমার দিকে–
দূর পৃথিবীর মায়া নিয়ে নিমেষেই যেতে পারি
অথচ জানি, জীবনে নেই কোনো বিকল্প মৌসুম
যেখানে মূর্ছিত হতে পারে সমস্ত নিদ্রাহীনতা
আর আমার দুয়ারে পড়ে রবে অস্ফুট নিশ্বাস।
২.
এ’শহরে তবু সন্ধ্যা নামলো বলে
সুযোগ মিললে তোমার কাছে যাওয়া
আর কোনদিন অদেখায় চলে গেলে
বুকে বিষাদের বয়ে যায় চির হাওয়া
তোমাকে দ্যাখেছি ফিরে যাওয়া শেষ রোদে
মাটির কাছে, প্রাচীন ছায়ার পাশে
অথবা ঘন নিশ্বাস নেওয়া বোধে
তোমাকে চেয়েছি লোকায়ত সর্বনাশে
ছিলাম কখনো পরিচিত রোদ মেখে
তোমার আঙুলে ফুটেছে বহুল স্বর
সময়ের কাছে প্রশ্ন রেখে রেখে
ঘুরে ঘুরে মরা এ’শহর ও’শহর
কাছে থাকা দিন সময় ফুরিয়ে যায়
নিমিষে সকাল ফুরায় সন্ধ্যেবেলায়
বেলা শেষে দ্যাখি চিরচেনা অপেক্ষায়
মুখ দ্যাখা শুধু ব্যথাতুর আয়নায়…
৩.
এই অর্থহীনতার পাশে, তুমি ডানা মেলে এসে—
আমার ভেতরে এঁকে দিলে দীর্ঘ কোনো এক ছায়া।
তবু সব পথ রুদ্ধ, বৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে থাকে
সজীবতাহীন রুক্ষ মাঠের ভেতর আমি একা
প্রবেশ দরজাগুলো, উড়ছে আমার চারপাশে
রক্তক্ষরণের ছাপ—অস্পষ্ট—স্মৃতিরা অগোছালো।
আমি দুঃখের থেকে বাঁচাতে গেছি নতুন দুখে,
নিজেই হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করেছি জ্বলন্ত ছাই
তুমি শূন্যে ভাসমান এক বিষণ্ণ আলোর শিখা
আঙুলের প্রতিবেশী হয়ে, তবু বহুদূরে যেন।
অন্ধকার কখনোবা গান হয়ে আসে শীত রাতে,
তোমার ছোঁয়ায় মেঘ পাথর হয়ে ভেঙে পড়বে
পৃথিবীর বুকে জেগে ওঠে মাতাল অস্বস্তি—ঢেউ
শিলাগুল্মের ভেতর যদি আবারও ফিরে আসো…
নভেম্বর ২০২৪