সৈয়দ সাখাওয়াৎ
–আমি চাইতে চাইতে বেমালুম
ভিখিরি বনে গেলাম
অথচ তোমার চোখের পাপড়িও
কেঁপে উঠলো না একদিন…
এই শহুরে পথের আলুথালু জীবনে, প্রাণ ঘসে ঘসে চলতে চলতে কত কিছুই তো ছুঁতে মন চায়। এরকম রঙমাখা বিকেলে বুকের ওম মেখে মেখে কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া একরত্তি জীবন–বহু মাইলেজ হারিয়ে যাওয়া অপেক্ষা–কতদূরে ফেরারি হতে পারে একটা জীবন! ব্যক্তিগত করে চাইবার মতন কী আছে আর, দূরের আলো– মেঘ ও বৃষ্টির স্বভাবে কেবল দূরে চলে যায়–যেভাবে চলে যাও–তোমার ছায়া রেখে।
একদিন ফুরিয়ে যাওয়া আলোয় খুব বেশি আলো করে এসেছিলে, একটা নিজস্ব নদী, নিজস্ব এক পাহাড় যেমন– ছড়িয়ে ছিলে দু-বাহু ডানার মতন। সিঁদুর রাঙা সন্ধ্যায় সমগ্র পৃথিবী যেন দাঁড়িয়েছিল এক বিন্দুতে। আলোকের স্বভাব মেনে তাই বুঝি আঁধার আসে–সন্ধ্যা আরতির গান মিলিয়ে যায় দূর কোন ঘন্টাধ্বনির মতন।
“বড় অসময়ে এলে—দূর গ্রহাণুপুঞ্জের মতো
দূরে দূরেই রইলে, দ্যাখি—বিহ্বল চোখের ভাষা
যেন জড়িয়ে রেখেছো চিরকালের নিষেধ গান
শুধু মনে পড়ে যায়, এখানে উষ্ণতা মিশে ছিলো
সেইখানে আজো আছি, কতদূরে বয়ে গেলো নদী!”
যেখানে পড়ে থাকে উদ্বাস্তু চোখের ভাষা, সেখানে কেন এত ভাষাহীন বিহ্বলতা–নিস্তরঙ্গ শরীরে কেন মায়াহাত ছোঁয় না আর, বলে না ‘ভালোবাসি’! কখনো আসবে তুমি–এই কাজলরেখার জলে?তিরতির করে কেঁপে উঠা নিভৃত পালকে–মর্মে যে সুর বেজে ওঠে–কবে ফিরবে তুমি তার ব্যাকুল ছায়ায়…
–অনুভবে অনুস্বভাবে