সৈয়দ সাখাওয়াৎ
কেবল তুমিই জানো, এখনো এই পালাবদলে–
এই সোঁদাগন্ধভরা নদীতে কেন ভেসে বেড়াই
কেন শহরের পথে পথে একা একা হেঁটে যাই
এই লক্ষ্যহীন যাত্রা কোথায় নিয়ে যায় আমাকে
তা-ও জানো কোনখানে জমে ওঠে বিষাদের জল
হারিয়ে গেলে তুমিও কি কাঁদবে স্মৃতি সমাধিতে?
জেনো, আঘ্রাণ শরীরে কোনদিন জানবে না কেউ
কতটা প্রবল জ্বরে, তোমারই নাম ডেকে গ্যাছি
মাটির ভীষণ কাছে, শুনি তোমারই কণ্ঠস্বর
কখনও ক্লান্ত স্বরে যদি ডেকে উঠি ওই নামে–
জেনো, শুভ্রতা তোমার, আমার কণ্ঠে বেজে উঠেছে
অথচ দ্যাখো, তুমিও জানোনি কত কত মূহুর্তে
এইসব বিফলের গান, বেজে ওঠে লোকারণ্যে
পুরনো শহরজুড়ে এঁকে গ্যাছি তাই স্মৃতিচিহ্ন
আর একটা বিকেল–কত মোহময় হয়ে ওঠে–
বন্ধুর মতন হাত ছুঁয়ে পাশে বসেছিলে বলে…
রোদ পুড়ে অন্ধ হই, যে তুমি সাজাও অন্ধকার
দূর যাত্রাপথে সূর্য যদি জ্বালে লেলিহান শিখা
সকল শব্দেই খুঁজি নির্ভার আঙুলের উত্তাপ
এই পৃথিবীর অক্ষে–উড়ে আসে যদি মৃদু ভাষা
জেগে থেকে পাড়ি দিতে পারি অন্ধকার প্রণয়ও
ঝরা পালকের ওমে, যেন এক অপরূপ গান–
মগ্ন হয় পিয়ানোর পাশে–ধূলো ভাঙে সুরে সুরে
এবং তোমার ছায়া, দূরে কোন কোলাহলজুড়ে–
পড়ে থাকে, যেন তার ফুরানোর নেই অবসর..
আর ঝরা পাতা হয়ে হারিয়ে যায় গুঢ় আঁধারে।
সেইসব ছায়ামগ্ন দিনে বহুল স্রোতের স্বরে–
তোমাকে শুনতে পাই, হারাই কোন বিহ্বলতায়
স্থির হয়ে পড়ি, স্থানু থেকে ক্রমশ গড়িয়ে পড়ি
শুনি ধুলোর শরীরে কত মায়া লেগে থাকে হায়
আমি তো পারিনি তার সমগ্র আঁধার শুষে নিতে
এমন পাখাও নেই যে বয়ে নিতে পারি সহজে
তবুও এক সন্ধ্যায়, যে মায়াটুকু জমিয়েছিলে–
তার প্রেমে এ’শতাব্দী ধরে রাখতে পারি তোমায়
তখন দূরের মেঘে বিদ্যুৎ শিখাটি দ্যাখো যদি
জেনো, আমার কবিতা বুকে জ্বলে উঠেছিলো তার।
লোকে বলে কত কথা! কত সন্ধ্যা জলের গেলাসে
আমি যেন ইশ্বরের মতো রহস্যময় তখন–
কোন এক বিষাদের গানে–যে তুমি হবে না জানি
গোলাপের নামে তুমি রয়ে যাবে মানুষের মুখে
প্রেমিকের হাত ধরে চলে যাবে সমুদ্র যাত্রায়–
যেভাবে আমিও যাই সংসার থেকে সংসারে
হাড়ের ভেতর যেন এক তীব্র শীত জমে ওঠে
শেষ স্পর্শের স্মৃতিতে–ডুবে যেতে থাকি তীব্র মোহে
দূর নিকটেও জানি যার ছায়া ফুরাবে না আর
পৃথিবী কখনো কাছে আসে না বিপরীত রেখায়।
জুলাই ২০২৪