সৌদামিনী, মনে পড়ে; একগোছা ফুল নিয়ে হাতে
বলতে চেয়েছি কত, যতবার দেখেছি তোমাকে
হাতে শেষ স্পর্শ মুছে নিয়ে পুনরায় ছুঁবো বলে—
তোমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছি হাত সহস্র বার
তোমার ছায়ার নিচে যেন কোলাহল— গান নেই
অশ্রুকণার মতন কিছু ছবি পড়ে আছে পাশে
আমি তার শেষবিন্দু—আঁধারের মতো ছুঁয়ে থাকি
তুমি কি টের পাওনি? সৌদামিনী-এখানে নিয়ত—
বৃষ্টির গান, তোমার স্মৃতির মতো বৃষ্টির কণা
কেন এ’জল আমাকে আহত করে প্রতিনিয়ত,
জানে না শহুরে লোক, যারা এসে চলে গ্যাছে দূরে
এই শহরের বুকে কত শত আলোক জ্বলছে
অথচ দ্যাখো আমার বুকের ভেতর অন্ধকার
তুমি কেন জানতে না, কতটা সজীব করে দিতে
অথবা জানতে ঠিক, শুধু আঁড়চোখে ভেঙে দিতে—
আমার সকল বাঁধ, সতর্ক পাহারা ভেঙে দিয়ে
তুমি চলে গেছো দূর নক্ষত্রালোকে— সমগ্র হয়ে
কেননা তুমি জানতে, সুর তার বিলয়ের দিকে
জলের মতো ক্রমশ গড়িয়ে চলে যায় সাগরে
আর একটা মানুষ, খুব বেশি হলে ক্লান্ত হবে
ফুরিয়ে যাবে সহজ চিৎকারে— মৃত্যু ভালোবেসে!
সৌদামিনী; তুমি এক সকাল হতে হতে হওনি
বিচ্ছিন্ন যুদ্ধের শেষে, তুমি যেন দিগন্তের চিল
যে পথে ঐশ্বর্য আসে, সে পথে হারালে কেন তুমি?
এই ভোরলগ্ন প্রেম , এক ফুৎকারে দূরে ঠেলে
কতটুকুই বা চাই, তারচেয়েও বেশি দিয়েছো—
পথে, ভিখারির হাতে—এইটুকু খুব বেশি নয়
তবু ক্রমশই আসে এই ঘন শীতল আঁধার
বিচ্ছেদ আগুনে পুড়ে তবু কেন পাইনি উষ্ণতা
হাড়ের ভেতর এক ভয়াবহ উষ্ণ প্রবঞ্চনা
নিয়ত করছে ক্লান্ত! সৌদামিনী— তুমি অলক্ষ্যের—
আঁধার থেকে গ্রহণ করো, এই বিপুল পৃথিবী!